দুপুরের সূর্য হেলে পড়েছে আধাঘণ্টা আগেই। মসজিদ থেকে জোহরের আযান ভেসে আসছে। আযান শুনে সময়জ্ঞান ফিরে পেলেন একজন। বললেন, আর পারছি না। দুপুর হয়ে গেল, অথচ একটি দানাও পেটে পড়েনি।
রোভার স্কাউটের স্বেচ্চাসেবক ওরা। গুলশান ডিএনসিসি মার্কেটে দমকল বাহিনীর সঙ্গে স্বেচ্ছাশ্রম দিচ্ছিলেন শনিবার সকাল থেকে। বিভিন্ন স্কুল-কলেজ থেকে এদিন ৩৫ জন শিক্ষার্থী যুক্ত হন দমকল বাহিনীর সঙ্গে। দুর্ঘটনাকবলিত এলাকায় স্বেচ্ছাসেবকের দায়িত্ব পালন করলেও দমকল বাহিনীর সঙ্গে মূল উদ্ধার কাজেও সম্পৃক্ত হন কেউ কেউ।
দুপুরে যখন এ স্বেচ্ছাসেবকদের সঙ্গে আলাপ হচ্ছিল, তখনও ডিএনসিসির একটি দোকানে আগুন জ্বলছিল। সে আগুন নেভাতে দমকল বাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে একীভূত হয়ে কাজ করছিলেন রোভার স্কাউটের সদস্যরা। পুড়ে যাওয়া মার্কেটটি তখন ছাইয়ের ভাগাড়। ধোঁয়া আর পোড়া গন্ধে একাকার পুরো এলাকা। মার্কেটের গলিপথগুলোতে চলাচল করাও ঝুঁকিপূর্ণ। সব ঝুঁকি দু’পায়ে মাড়িয়েই তরুণ শিক্ষার্থীরা মন দিয়েছেন স্বেচ্ছাশ্রমে।
রোজা নামের এক শিক্ষার্থী এসেছেন ঢাকা জেলার হেল্ডাল ওপেন রোভার স্কাউট গ্রুপ থেকে। তিনি মির্জা আব্বাস মহিলা ডিগ্রি কলেজে দ্বাদশ শ্রেণিতে পড়ছেন। আগুন লাগার খবর শুনেই গ্রুপের পক্ষ থেকে সংঘবদ্ধ হয়ে এসেছেন।
তিনি বলেন, ‘সকালে এসেছি। নাস্তাও করা হয়নি। আযান না শুনলে হয়তো বুঝতেই পারতাম যে না দুপুর হয়ে গেছে। বড় কষ্ট লাগছে মানুষকে নিঃস্ব হতে দেখে। আগুনের কাছে মানুষ যে কত অসহায়, তা এসব জায়গায় না আসলে বোঝা যায় না। তবে ভালো লাগছে উদ্ধার কাজে অংশ নিতে পেরে।’
ন্যাশনাল গার্লস কলেজের এইচএসসি পড়ুয়া উম্মে হাবিবা বলেন, ‘মানুষের সামান্য উপকারে আসতে পারলেই স্কাউটে ভর্তি হওয়া সার্থক বলে মনে করি। এসব জায়গায় কাজ করে মানুষের প্রতি মানুষের দায়বদ্ধতার বিষয়টি উপলব্ধি করতে পারি। আসলে প্রতিটি মানুষই কোনো না কোনোভাবে অসহায়। আর এ সত্য যদি সবাই বুঝতে পারতাম, তাহলে সমাজে এত হিংসা বা ধ্বংসযজ্ঞ হত না।’
গুলশানের ডিএনসিসি মার্কেটের কাঁচাবাজার ও সুপার মার্কেটে শনিবার ভোরে আগুন লাগে। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের ২০টি ইউনিট প্রায় আড়াই ঘণ্টা চেষ্টার পর আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
এর আগে ২০১৭ সালের ৩ জানুয়ারি একই মার্কেটে আগুন লেগেছিল। সেই সময় ১৬ ঘণ্টা চেষ্টা চা?